শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা তৃতীয় অধ্যায়: কর্মযোগ | Srimad Bhagavad Gita Chapter-03 in bengali

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার তৃতীয় অধ্যায় (কর্মযোগ) এর সম্পূর্ণ শ্লোক, বাংলা অনুবাদ ও তাৎপর্য। কর্মযোগের শিক্ষা এবং জীবনে এর প্রয়োগ জানুন।

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা – তৃতীয় অধ্যায় (কর্মযোগ)

শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুন

ভূমিকা:শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা সনাতন ধর্মের একটি অমূল্য গ্রন্থ, যা জীবনের সকল প্রশ্নের উত্তর প্রদান করে। তৃতীয় অধ্যায়, কর্মযোগ, আমাদের শিক্ষা দেয় কীভাবে নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমে আমরা কর্মফলের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে পরম শান্তি ও আত্মোন্নতি লাভ করতে পারি। এই অধ্যায়ে অর্জুনের সংশয় এবং শ্রীকৃষ্ণের গভীর তত্ত্বময় উপদেশের মাধ্যমে কর্মযোগের মহত্ত্ব প্রকাশিত হয়। আসুন, শ্লোকগুলোর মাধ্যমে এই শিক্ষা গ্রহণ করি।

শ্লোক ৩.১

অর্জুন উবাচ –
জ্যায়সী চেৎ কর্মণস্তে মতা বুদ্ধির্জনার্দন।
তৎ কিং কর্মণি ঘোরে মাং নিয়োজয়সি কেশব।।৩.১।।

বাংলা অনুবাদ:
অর্জুন বললেন — হে জনার্দন! হে কেশব! যদি তোমার মতো কর্ম অপেক্ষা ভক্তি-বিষয়িনী বুদ্ধি শ্রেয়তর হয়, তাহলে এই ভয়ানক যুদ্ধে নিযুক্ত হওয়ার জন্য কেন আমাকে প্ররোচিত করছ?

শ্লোক ৩.২

অর্জুন উবাচ –
ব্যামিশ্রেণেব বাক্যেন বুদ্ধিং মোহয়সীব মে।
তদেকং বদ নিশ্চিত্য যেন শ্রেয়োহমাপ্নুয়াম্।।৩.২।।

বাংলা অনুবাদ:
তুমি যেন দ্ব্যর্থবোধক বাক্যের দ্বারা আমার বুদ্ধি বিভ্রান্ত করছ। তাই, দয়া করে আমাকে নিশ্চিতভাবে বল কোনটি আমার পক্ষে সবচেয়ে শ্রেয়স্কর।

শ্লোক ৩.৩

শ্রীভগবানুবাচ –
লোকেহস্মিন্ দ্বিবিধা নিষ্ঠা পুরা প্রোক্তা ময়ানঘ।
জ্ঞানযোগেন সাংখ্যানাং কর্মযোগেন যোগিনাম্।।৩.৩।।

বাংলা অনুবাদ:
পরমেশ্বর ভগবান বললেন — হে নিষ্পাপ অর্জুন! আমি ইতিপূর্বে ব্যাখ্যা করেছি যে, দুই প্রকার মানুষ আত্ম-উপলব্ধি করতে চেষ্টা করে। কিছু লোক অভিজ্ঞতালব্ধ আবার তা ভক্তির মাধ্যমে জানতে চান।

তাৎপর্য: শ্রীকৃষ্ণ এখানে জ্ঞানযোগ ও কর্মযোগের দুটি পথের কথা বলছেন। এটি আমাদের বোঝায় যে, ব্যক্তির স্বভাব ও প্রবৃত্তি অনুযায়ী মুক্তির পথ ভিন্ন হতে পারে।

শ্লোক ৩.৪

শ্রীভগবানুবাচ –
ন কর্মণামনারম্ভান্ নৈষ্কর্ম্যং পুরুষোহশ্নুতে।
ন চ সন্ন্যসনাদেব সিদ্ধিং সমাধিগচ্ছতি।।৩.৪।।

বাংলা অনুবাদ:
কেবল কর্মের অনুষ্ঠান না করার মাধ্যমে কর্মফল থেকে মুক্ত হওয়া যায় না, আবার কর্মত্যাগের মাধ্যমেও সিদ্ধি লাভ করা যায় না।

শ্লোক ৩.৫

শ্রীভগবানুবাচ –
নহি কশ্চিৎ ক্ষণমপি জাতু তিষ্ঠত্যকর্মকৃৎ।
কার্যতে হ্যবশঃ কর্ম সর্বঃ প্রকৃতিজৈর্গুণৈঃ।।৩.৫।।

বাংলা অনুবাদ:
সকলেই মায়াজাত গুণসমূহের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অসহায়ভাবে কর্ম করতে বাধ্য হয়; তাই কর্ম না করে কেউই ক্ষণকালও থাকতে পারে না।

তাৎপর্য: এই শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বোঝাচ্ছেন যে, প্রকৃতির ত্রিগুণের প্রভাবে মানুষ সবসময় কর্মে লিপ্ত থাকে। তাই কর্ম ত্যাগ করা সম্ভব নয়, তবে কর্মের প্রকৃতি পরিবর্তন করা যায়।

শ্লোক ৩.৬

শ্রীভগবানুবাচ –
কর্মেন্দ্রিয়াণি সংযম্য য আস্তে মনসা স্মরন্।
ইন্দ্রিয়ার্থান্ বিমূঢ়াত্মা মিথ্যাচারঃ স উচ্যতে।।৩.৬।।

বাংলা অনুবাদ:
যে ব্যক্তি পঞ্চ-কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ, রস আদি ইন্দ্রিয় বিষয়গুলি স্মরণ করে, সেই মূঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভণ্ড বলা হয়ে থাকে।

শ্লোক ৩.৭

শ্রীভগবানুবাচ –
যস্ত্বিন্দ্রিয়াণি মনসা নিয়ম্যারভতেহর্জুন।
কর্মেন্দ্রিয়ৈঃ কর্মযোগমসক্তঃ স বিশিষ্যতে।।৩.৭।।

বাংলা অনুবাদ:
কিন্তু যিনি মনের দ্বারা ইন্দ্রিয়গুলিকে সংযত করে অনাসক্তভাবে কর্মযোগের অনুষ্ঠান করেন, তিনি পূর্বোক্ত মিথ্যাচারী অপেক্ষা অনেক গুণে শ্রেষ্ঠ।

শ্লোক ৩.৮

শ্রীভগবানুবাচ –
নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ো হ্যকর্মণঃ।
শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিদ্ধ্যেদকর্মণঃ।।৩.৮।।

বাংলা অনুবাদ:
তুমি শাস্ত্রোক্ত কর্মের অনুষ্ঠান কর, কেন না কর্মত্যাগ থেকে কর্মের অনুষ্ঠান শ্রেয়। কর্ম না করে কেউ দেহযাত্রাও নির্বাহ করতে পারে না।

শ্লোক ৩.৯

শ্রীভগবানুবাচ –
যজ্ঞার্থাৎ কর্মণোহন্যত্র লোকোহয়ং কর্মবন্ধনঃ।
তদর্থং কর্ম কৌন্তেয় মুক্তসঙ্গঃ সমাচর।।৩.৯।।

বাংলা অনুবাদ:
বিষ্ণুর প্রীতি সম্পাদন করার জন্য কর্ম করা উচিত; তা না হলে কর্মই এই জড় জগতে বন্ধনের কারণ। তাই, হে কৌন্তেয়! ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই কেবল তুমি তোমার কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান কর এবং এভাবেই তুমি সর্বদাই বন্ধন থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।

তাৎপর্য: কর্ম যদি ভগবানের উদ্দেশ্যে সমর্পিত হয়, তবে তা মুক্তির পথে নিয়ে যায়। এটি আমাদের শেখায় যে, স্বার্থপর কর্ম বন্ধন সৃষ্টি করে।

শ্লোক ৩.১০

শ্রীভগবানুবাচ –
সহযজ্ঞাঃ প্রজাঃ সৃষ্ট্বা পুরোবাচ প্রজাপতিঃ।
অনেন প্রসবিষ্যধ্বমেষ বোহস্ত্বিষ্টকামধুক্।।৩.১০।।

বাংলা অনুবাদ:
সৃষ্টির প্রারম্ভে সৃষ্টিকর্তা যজ্ঞাদি সহ প্রজাসকল সৃষ্টি করে বলেছিলেন — “এই যজ্ঞের দ্বারা তোমরা উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হও। এই যজ্ঞ তোমাদের সমস্ত অভীষ্ট পূর্ণ করবে।”

শ্লোক ৩.১১

শ্রীভগবানুবাচ –
দেবান্ ভাবয়তানেন তে দেবা ভাবয়স্তু বঃ।
পরস্পরং ভাবয়ন্তঃ শ্রেয়ঃ পরমবাপ্স্যথ।।৩.১১।।

বাংলা অনুবাদ:
তোমাদের যজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রীত হয়ে দেবতারা তোমাদের প্রীতি সাধন করবেন। এভাবেই পরস্পরের প্রীতি সম্পাদন করার মাধ্যমে তোমরা পরম মঙ্গল লাভ করবে।

শ্লোক ৩.১২

শ্রীভগবানুবাচ –
ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ।
তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙ্ক্তে স্তেন এব সঃ।।৩.১২।।

বাংলা অনুবাদ:
যজ্ঞের ফলে সন্তুষ্ট হয়ে দেবতারা তোমাদের বাঞ্ছিত ভোগ্যবস্তু প্রদান করবেন। কিন্তু দেবতাদের প্রদত্ত বস্তু তাঁদের নিবেদন না করে যে ভোগ করে, সে নিশ্চয়ই চোর।

শ্লোক ৩.১৩

শ্রীভগবানুবাচ –
যজ্ঞশিষ্টাশিনঃ সন্তো মুচ্যন্তে সর্বকিল্বিষৈঃ।
ভুঞ্জতে তে ত্বঘং পাপা যে পচন্ত্যাত্মকারণাৎ।।৩.১৩।।

বাংলা অনুবাদ:
ভগবদ্ভক্তেরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, কারণ তাঁরা যজ্ঞাবশিষ্ট অন্নাদি গ্রহণ করেন। যারা কেবল স্বার্থপর হয়ে নিজেদের ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তির জন্য অন্নাদি পাক করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে।

শ্লোক ৩.১৪

শ্রীভগবানুবাচ –
অন্নাদ্ ভবন্তি ভূতানি পর্জন্যাদন্নসম্ভবঃ।
যজ্ঞাদ্ ভবতি পর্জন্যো যজ্ঞঃ কর্মসমুদ্ভবঃ।।৩.১৪।।

বাংলা অনুবাদ:
অন্ন খেয়ে প্রাণীগণ জীবন ধারণ করে। বৃষ্টি হওয়ার ফলে অন্ন উৎপন্ন হয়। যজ্ঞ অনুষ্ঠান করার ফলে বৃষ্টি উৎপন্ন হয় এবং শাস্ত্রোক্ত কর্ম থেকে যজ্ঞ উৎপন্ন হয়।

শ্লোক ৩.১৫

শ্রীভগবানুবাচ –
কর্ম ব্রহ্মোদ্ভবং বিদ্ধি ব্রহ্মাক্ষরসমুদ্ভবম্।
তস্মাৎ সর্বগতং ব্রহ্ম নিত্যং যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিতম্।।৩.১৫।।

বাংলা অনুবাদ:
যজ্ঞাদি কর্ম বেদ থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং বেদ অক্ষর বা পরমেশ্বর ভগবান থেকে প্রকাশিত হয়েছে। অতএব সর্বব্যাপী ব্রহ্ম সর্বদা যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিত আছেন।

শ্লোক ৩.১৬

শ্রীভগবানুবাচ –
এবং প্রবর্তিতং চক্রং নানুবর্তয়তীহ যঃ।
অঘায়ুরিন্দ্রিয়ারামো মোঘং পার্থ স জীবতি।।৩.১৬।।

বাংলা অনুবাদ:
হে অর্জুন! যে ব্যক্তি এই জীবনে বেদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যজ্ঞ অনুষ্ঠানের পন্থা অনুসরণ করে না, সেই ইন্দ্রিয়সুখ-পরায়ণ পাপী ব্যক্তি বৃথা জীবন ধারণ করে।

শ্লোক ৩.১৭

শ্রীভগবানুবাচ –
যস্ত্বাত্মরতিরেব স্যাদাত্মতৃপ্তশ্চ মানবঃ।
আত্মন্যেব চ সন্তুষ্টস্তস্য কার্যং ন বিদ্যতে।।৩.১৭।।

বাংলা অনুবাদ:
কিন্তু যে ব্যক্তি আত্মাতেই প্রীত, আত্মাতেই তৃপ্ত এবং আত্মাতেই সন্তুষ্ট, তাঁর কোনো কর্তব্যকর্ম নেই।

শ্লোক ৩.১৮

শ্রীভগবানুবাচ –
নৈব তস্য কৃতেনার্থো নাকৃতেনেহ কশ্চন।
ন চাস্য সর্বভূতেষু কশ্চিদর্থব্যপাশ্রয়ঃ।।৩.১৮।।

বাংলা অনুবাদ:
আত্মানন্দ অনুভবকারী ব্যক্তির এই জগতে ধর্ম অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই এবং এই প্রকার কর্ম না করারও কোনো কারণ নেই। তাকে অন্য কোনো প্রাণীর উপর নির্ভর করতেও হয় না।

শ্লোক ৩.১৯

শ্রীভগবানুবাচ –
তস্মাদসক্তঃ সততং কার্যং কর্ম সমাচর।
অসক্তো হ্যাচরন্ কর্ম পরমাপ্নোতি পুরুষঃ।।৩.১৯।।

বাংলা অনুবাদ:
অতএব, কর্মফলের প্রতি আসক্তি রহিত হয়ে কর্তব্যকর্ম সম্পাদন কর। অনাসক্ত হয়ে কর্ম করার ফলেই মানুষ পরতত্ত্বকে লাভ করতে পারে।

শ্লোক ৩.২০

শ্রীভগবানুবাচ –
কর্মণৈব হি সংসিদ্ধিমাস্থিতা জনকাদয়ঃ।
লোকসংগ্রহমেবাপি সংপশ্যন্ কর্তুমর্হসি।।৩.২০।।

বাংলা অনুবাদ:
জনক আদি রাজারাও কর্ম দ্বারাই সংসিদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছিলেন। অতএব, জনসাধারণকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তোমার কর্ম করা উচিত।

তাৎপর্য: এই শ্লোকটি আমাদের শেখায় যে, শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা নিজেদের জন্য নয়, সমাজের কল্যাণের জন্য কর্ম করেন, যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়।

শ্লোক ৩.২১

শ্রীভগবানুবাচ –
যদ্ যদাচরতি শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনঃ।
স যৎ প্রমাণং কুরুতে লোকস্তদনুবর্ততে।।৩.২১।।

বাংলা অনুবাদ:
শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যেভাবে আচরণ করেন, সাধারণ মানুষেরা তার অনুকরণ করে। তিনি যা প্রমাণ বলে স্বীকার করেন, সমগ্র পৃথিবী তারেই অনুসরণ করে।

Related Posts

শ্লোক ৩.২২

শ্রীভগবানুবাচ –
ন মে পার্থাস্তি কর্তব্যং ত্রিষু লোকেষু কিঞ্চন।
নানবাপ্তমবাপ্তব্যং বর্তে এব চ কর্মণি।।৩.২২।।

বাংলা অনুবাদ:
হে পার্থ! এই ত্রিজগতে আমার কিছুই কর্তব্য নেই। আমার অপ্রাপ্ত কিছু নেই এবং প্রাপ্তব্যও কিছু নেই। তবুও আমি কর্মে ব্যাপৃত আছি।

শ্লোক ৩.২৩

শ্রীভগবানুবাচ –
যদি হ্যহং ন বর্তেয়ং জাতু কর্মণ্যতন্দ্রিতঃ।
মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ।।৩.২৩।।

বাংলা অনুবাদ:
হে পার্থ! আমি যদি অনলস হয়ে কর্তব্যকর্মে প্রবৃত্ত না হই, তবে আমার অনুবর্তী হয়ে সমস্ত মানুষই কর্ম ত্যাগ করবে।

শ্লোক ৩.২৪

শ্রীভগবানুবাচ –
উৎসীদেয়ুরিমে লোকা ন কুর্যাং কর্ম চেদহম্।
সঙ্করস্য চ কর্তা স্যামুপহন্যামিমাঃ প্রজাঃ।।৩.২৪।।

বাংলা অনুবাদ:
আমি যদি কর্ম না করি, তাহলে এই সমস্ত লোক উৎসন্ন হবে। আমি বর্ণসঙ্কর সৃষ্টির কারণ হব এবং তার ফলে আমার দ্বারা সমস্ত প্রজা বিনষ্ট হবে।

শ্লোক ৩.২৫

শ্রীভগবানুবাচ –
সক্তাঃ কর্মণ্যবিদ্বাংসো যথা কুর্বন্তি ভারত।
কুর্যাদ্ বিদ্বাংস্তথাসক্তশ্চিকীর্ষুর্লোকসংগ্রহম্।।৩.২৫।।

বাংলা অনুবাদ:
হে ভারত! অজ্ঞানীরা যেমন কর্মফলের প্রতি আসক্ত হয়ে তাদের কর্তব্যকর্ম করে, তেমনই জ্ঞানীরা অনাসক্ত হয়ে মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য কর্ম করবেন।

শ্লোক ৩.২৬

শ্রীভগবানুবাচ –
ন বুদ্ধিভেদং জনয়েদজ্ঞানাং কর্মসঙ্গিনাম্।
জোষয়েৎ সর্বকর্মাণি বিদ্বান্ যুক্তঃ সমাচরন্।।৩.২৬।।

বাংলা অনুবাদ:
জ্ঞানবান ব্যক্তিরা কর্মাসক্ত জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের বুদ্ধি বিভ্রান্ত করবেন না। বরং, তাঁরা ভক্তিযুক্ত চিত্তে সমস্ত কর্ম অনুষ্ঠান করে জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের কর্মে প্রবৃত্ত করবেন।

শ্লোক ৩.২৭

শ্রীভগবানুবাচ –
প্রকৃতেঃ ক্রিয়মাণানি গুণৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ।
অহঙ্কারবিমূঢ়াত্মা কর্তাহমিতি মন্যতে।।৩.২৭।।

বাংলা অনুবাদ:
অহঙ্কারে মোহাচ্ছন্ন জীব জড়া প্রকৃতির ত্রিগুণ দ্বারা ক্রিয়মাণ সমস্ত কার্যকে স্বীয় কার্য বলে মনে করে ‘আমি কর্তা’ — এই রকম অভিমান করে।

তাৎপর্য: এই শ্লোকটি আমাদের বোঝায় যে, অহঙ্কারের কারণে আমরা নিজেদের কর্মের কারণ মনে করি, যদিও সবকিছু প্রকৃতির গুণ দ্বারা পরিচালিত হয়।

শ্লোক ৩.২৮

শ্রীভগবানুবাচ –
তত্ত্ববিৎ তু মহাবাহো গুণকর্মবিভাগয়োঃ।
গুণা গুণেষু বর্তন্ত ইতি মত্বা ন সজ্জতে।।৩.২৮।।

বাংলা অনুবাদ:
হে মহাবাহো! তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি ভগবদ্ভক্তিমুখী কর্ম ও সকাম কর্মের পার্থক্য ভালোভাবে অবগত হয়ে কখনো ইন্দ্রিয়সুখ ভোগাত্মক কার্যে প্রবৃত্ত হন না।

শ্লোক ৩.২৯

শ্রীভগবানুবাচ –
প্রকৃতের্গুণসংমূঢ়াঃ সজ্জন্তে গুণকর্মসু।
তানকৃৎস্নবিদো মন্দান্ কৃৎস্নবিন্ন বিচালয়েৎ।।৩.২৯।।

বাংলা অনুবাদ:
জড়া প্রকৃতির গুণের দ্বারা মোহাচ্ছন্ন হয়ে, অজ্ঞান ব্যক্তিরা জাগতিক কার্যকলাপে প্রবৃত্ত হয়। কিন্তু তাদের কর্ম নিকৃষ্ট হলেও তত্ত্বজ্ঞানী পুরুষেরা সেই মন্দবুদ্ধি ও অল্পজ্ঞ ব্যক্তিগণকে বিচলিত করেন না।

শ্লোক ৩.৩০

শ্রীভগবানুবাচ –
ময়ি সর্বাণি কর্মাণি সংন্যস্যাধ্যাত্মচেতসা।
নিরাশীর্নির্মমো ভূত্বা যুধ্যস্ব বিগতজ্বরঃ।।৩.৩০।।

বাংলা অনুবাদ:
অতএব, হে অর্জুন! অধ্যাত্মচেতনা-সম্পন্ন হয়ে তোমার সমস্ত কর্ম আমাকে সমর্পণ কর এবং মমতাশূন্য, নিষ্কাম ও শোকশূন্য হয়ে তুমি যুদ্ধ কর।

শ্লোক ৩.৩১

শ্রীভগবানুবাচ –
যে মে মতমিদং নিত্যমনুতিষ্ঠন্তি মানবাঃ।
শ্রদ্ধাবন্তোহনসূয়ন্তো মুচ্যন্তে তেহপি কর্মভিঃ।।৩.৩১।।

বাংলা অনুবাদ:
আমার নির্দেশ অনুসারে যে-সমস্ত মানুষ তাঁদের কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান করেন এবং যাঁরা শ্রদ্ধাবান ও মাৎসর্য রহিত হয়ে এই উপদেশ অনুসরণ করেন, তাঁরাও কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হন।

শ্লোক ৩.৩২

শ্রীভগবানুবাচ –
যে ত্বেতদভ্যসূয়ন্তো নানুতিষ্ঠন্তি মে মতম্।
সর্বজ্ঞানবিমূঢ়াংস্তান্ বিদ্ধি নষ্টানচেতসঃ।।৩.৩২।।

বাংলা অনুবাদ:
কিন্তু যারা অসূয়াপূর্বক আমার এই উপদেশ পালন করে না, তাদেরকে সমস্ত জ্ঞান থেকে বঞ্চিত, বিমূঢ় এবং পরমার্থ লাভের সকল প্রচেষ্টা থেকে ভ্রষ্ট বলে জানবে।

শ্লোক ৩.৩৩

শ্রীভগবানুবাচ –
সদৃশং চেষ্টতে স্বস্যাঃ প্রকৃতের্জ্ঞানবানপি।
প্রকৃতিং যান্তি ভূতানি নিগ্রহঃ কিং করিষ্যতি।।৩.৩৩।।

বাংলা অনুবাদ:
জ্ঞানবান ব্যক্তিও তাঁর স্বভাব অনুসারে কার্য করেন, কারণ প্রত্যেকেই ত্রিগুণজাত তাঁর স্বীয় স্বভাবকে অনুগমন করেন। সুতরাং নিগ্রহ করে কী লাভ হবে?

শ্লোক ৩.৩৪

শ্রীভগবানুবাচ –
ইন্দ্রিয়স্যেন্দ্রিয়স্যার্থে রাগদ্বেষৌ ব্যবস্থিতৌ।
তয়োর্ন বশমাগচ্ছেত্ তৌ হ্যস্য পরিপন্থিনৌ।।৩.৩৪।।

বাংলা অনুবাদ:
সমস্ত জীবই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুতে আসক্তি অথবা বিরক্তি অনুভব করে, কিন্তু এভাবে ইন্দ্রিয় ও ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের বশীভূত হওয়া উচিত নয়, কারণ তা পারমার্থিক প্রগতির পথে প্রতিবন্ধক।

শ্লোক ৩.৩৫

শ্রীভগবানুবাচ –
শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ।
স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ।।৩.৩৫।।

বাংলা অনুবাদ:
স্বধর্মের অনুষ্ঠান দোষযুক্ত হলেও উত্তমরূপে অনুষ্ঠিত পরধর্ম থেকে উৎকৃষ্ট। স্বধর্ম সাধনে যদি মৃত্যু হয়, তাও মঙ্গলজনক, কিন্তু অন্যের ধর্মের অনুষ্ঠান করা বিপজ্জনক।

তাৎপর্য: এই শ্লোকটি আমাদের শেখায় যে, নিজের স্বভাব ও কর্তব্য অনুযায়ী কর্ম করাই শ্রেষ্ঠ। অন্যের পথ অনুকরণ করা বিপদের কারণ হতে পারে।

শ্লোক ৩.৩৬

অর্জুন উবাচ –
অথ কেন প্রযুক্তোহয়ং পাপং চরতি পুরুষঃ।
অনিচ্ছন্নপি বার্ষ্ণেয় বলাদিব নিয়োজিতঃ।।৩.৩৬।।

বাংলা অনুবাদ:
অর্জুন বললেন — হে বার্ষ্ণেয়! মানুষ কার দ্বারা চালিত হয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেন বলপূর্বক নিয়োজিত হয়েই পাপাচরণে প্রবৃত্ত হয়?

শ্লোক ৩.৩৭

শ্রীভগবানুবাচ –
কাম এষ ক্রোধ এষ রজোগুণসমুদ্ভবঃ।
মহাশনো মহাপাপ্মা বিদ্ধ্যেনমিহ বৈরিণম্।।৩.৩৭।।

বাংলা অনুবাদ:
পরমেশ্বর ভগবান বললেন — হে অর্জুন! রজোগুণ থেকে সমুদ্ভূত কামই মানুষকে এই পাপে প্রবৃত্ত করে এবং এই কামই ক্রোধে পরিণত হয়। কাম সর্বগ্রাসী ও পাপাত্মক; কামকেই জীবের প্রধান শত্রু বলে জানবে।

তাৎপর্য: কাম আমাদের জ্ঞানকে আচ্ছন্ন করে এবং পাপের দিকে নিয়ে যায়। এটি আমাদের সতর্ক করে যে, ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়।

শ্লোক ৩.৩৮

শ্রীভগবানুবাচ –
ধূমেনাব্রিয়তে বহ্নির্যথাদর্শো মলেন চ।
যথোল্বেনাবৃতো গর্ভস্তথা তেনেদমাবৃতম্।।৩.৩৮।।

বাংলা অনুবাদ:
অগ্নি যেমন ধূম দ্বারা আবৃত থাকে, দর্পণ যেমন ময়লার দ্বারা আবৃত থাকে অথবা গর্ভ যেমন জরায়ুর দ্বারা আবৃত থাকে, তেমনই জীবাত্মা বিভিন্ন মাত্রায় এই কামের দ্বারা আবৃত থাকে।

শ্লোক ৩.৩৯

শ্রীভগবানুবাচ –
আবৃতং জ্ঞানমেতেন জ্ঞানিনো নিত্যবৈরিণা।
কামরূপেণ কৌন্তেয় দুষ্পূরেণানলেন চ।।৩.৩৯।।

বাংলা অনুবাদ:
কামরূপী চির শত্রুর দ্বারা জীবের শুদ্ধ চেতনা আবৃত হয়। এই কাম দুর্বারিত অগ্নির মতো চির অতৃপ্ত।

শ্লোক ৩.৪০

শ্রীভগবানুবাচ –
ইন্দ্রিয়াণি মনো বুদ্ধিরস্যাধিষ্ঠানমুচ্যতে।
এতৈর্বিমোহয়ত্যেষ জ্ঞানমাবৃত্য দেহিনম্।।৩.৪০।।

বাংলা অনুবাদ:
ইন্দ্রিয়সমূহ, মন ও বুদ্ধি এই কামের আশ্রয়স্থল। এই ইন্দ্রিয় আদির দ্বারা কাম জীবের প্রকৃত জ্ঞানকে আচ্ছন্ন করে তাকে বিভ্রান্ত করে।

শ্লোক ৩.৪১

শ্রীভগবানুবাচ –
তস্মাত্ত্বমিন্দ্রিয়াণ্যাদৌ নিয়ম্য ভরতর্ষভ।
পাপ্মানং প্রজহি হ্যেনং জ্ঞানবিজ্ঞাননাশনম্।।৩.৪১।।

বাংলা অনুবাদ:
অতএব, হে ভরতশ্রেষ্ঠ! তুমি প্রথমে ইন্দ্রিয়গুলিকে নিয়ন্ত্রিত করে জ্ঞান ও বিজ্ঞান-নাশক পাপের প্রতীকরূপ এই কামকে বিনাশ কর।

শ্লোক ৩.৪২

শ্রীভগবানুবাচ –
ইন্দ্রিয়াণি পরাণ্যাহুরিন্দ্রিয়েভ্যঃ পরং মনঃ।
মনসস্তু পরা বুদ্ধির্যো বুদ্ধেঃ পরতস্তু সঃ।।৩.৪২।।

বাংলা অনুবাদ:
স্থূল জড় পদার্থ থেকে ইন্দ্রিয়গুলি শ্রেয়; ইন্দ্রিয়গুলি থেকে মন শ্রেয়; মন থেকে বুদ্ধি শ্রেয়; আর তিনি (আত্মা) সেই বুদ্ধি থেকেও শ্রেয়।

শ্লোক ৩.৪৩

শ্রীভগবানুবাচ –
এবং বুদ্ধেঃ পরং বুদ্ধ্বা সংস্তভ্যাত্মানমাত্মনা।
জহি শত্রুং মহাবাহো কামরূপং দুরাসদম্।।৩.৪৩।।

বাংলা অনুবাদ:
হে মহাবীর অর্জুন! নিজেকে জড় ইন্দ্রিয়, মন ও বুদ্ধির অতীত জেনে, নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধির দ্বারা মনকে স্থির কর এবং এভাবেই চিৎ-শক্তির দ্বারা কামরূপ দুর্জয় শত্রুকে জয় কর।

তাৎপর্য: এই শ্লোকটি কর্মযোগের চূড়ান্ত শিক্ষা। আত্মার শক্তি দিয়ে কামকে জয় করা সম্ভব, যা আমাদের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যের দিকে নিয়ে যায়।

ইতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা তৃতীয় অধ্যায়: কর্মযোগ সমাপ্ত!

কর্মযোগের মূল শিক্ষা

  • কর্ম ত্যাগ নয়, নিষ্কাম কর্মই মুক্তির পথ।
  • যজ্ঞের জন্য কর্ম করলে কর্মফলের বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • কাম ও ক্রোধ জীবের প্রধান শত্রু, তাই ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি।
  • শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা লোকসংগ্রহের জন্য কর্ম করেন, যা অন্যদের অনুপ্রাণিত করে।
  • স্বধর্ম পালন করা পরধর্মের চেয়ে শ্রেয়, এমনকি তাতে দোষ থাকলেও।
  • সমস্ত কর্ম ভগবানের উদ্দেশ্যে সমর্পণ করলে জীবন পবিত্র হয়।

উপসংহার:তৃতীয় অধ্যায় আমাদের শিক্ষা দেয় যে, কর্মযোগ হলো ফলের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে ভগবানের উদ্দেশ্যে কর্তব্য পালনের পথ। শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ অনুসারে, আমরা যদি কাম, ক্রোধ ও অহঙ্কারকে জয় করে নিষ্কাম কর্ম করি, তবে আমরা জীবনের প্রকৃত শান্তি ও মুক্তি লাভ করতে পারি। এই শিক্ষা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করলে আমরা নিজেদের এবং সমাজের কল্যাণ সাধন করতে পারি।

কর্মযোগ কী?

কর্মযোগ হলো ফলের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে নিষ্কাম ভাবে কর্তব্য পালনের পথ। শ্রীকৃষ্ণ এই অধ্যায়ে বোঝান যে, কর্ম ত্যাগ নয়, বরং ভগবানের উদ্দেশ্যে সমর্পিত কর্মই মুক্তির পথ।

কর্মযোগ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কর্মযোগ আমাদের শেখায় কীভাবে জীবনের দায়িত্ব পালন করতে হয়, তবু ফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে। এটি মনকে শান্ত রাখে এবং কর্মফলের বন্ধন থেকে মুক্তি দেয়।

কামকে কীভাবে জয় করা যায়?

শ্লোক ৩.৪৩-এ শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ইন্দ্রিয়, মন ও বুদ্ধির উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে এবং আত্মার শক্তির মাধ্যমে কামকে জয় করা যায়। ধ্যান, স্বধর্ম পালন, এবং ভক্তি এতে সাহায্য করে।

স্বধর্ম কী এবং কেন এটি পালন করা উচিত?

স্বধর্ম হলো নিজের স্বভাব ও দায়িত্ব অনুযায়ী কর্ম। শ্লোক ৩.৩৫-এ বলা হয়েছে, স্বধর্ম পালন করা পরধর্মের চেয়ে শ্রেয়, কারণ এটি আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মানসিক শান্তি দেয়।

কর্মযোগ কীভাবে আধুনিক জীবনে প্রয়োগ করা যায়?

কর্মযোগ আমাদের শেখায় কর্মক্ষেত্রে বা পারিবারিক জীবনে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে, কিন্তু সাফল্য বা ব্যর্থতার চিন্তায় না জড়িয়ে। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক পড়ানোর সময় শুধু শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য কাজ করবেন, ফলাফলের চাপ না নিয়ে।

আরো জানুন:
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার অন্যান্য অধ্যায় সম্পর্কে জানতে আমাদের প্রথম অধ্যায় এবং দ্বিতীয় অধ্যায় পড়ুন।

আপনার মতামত জানান:
কর্মযোগ সম্পর্কে আপনার চিন্তাভাবনা কী? এই শিক্ষা কীভাবে আপনার জীবনে প্রয়োগ করছেন? কমেন্টে লিখুন এবং পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিন!


শ্রদ্ধা জানাই জ্ঞানকে, সম্মান রাখি সৃষ্টিতে। Vedayaan (বেদায়ান)-এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা, ছবি ও উপস্থাপন অনন্য এবং সযত্নে প্রস্তুত। এই পোস্ট বা এর যেকোনো অংশ অনুমতি ছাড়া কপি, পুনঃপ্রকাশ বা সম্পাদনা করা আইনত নিষিদ্ধ। কোনো ধরনের অননুমোদিত ব্যবহার করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের প্রয়াসের মর্যাদা রাখতে অনুগ্রহ করে কোডে মূল ক্রেডিট বজায় রাখুন।

Copyright

Vedayaan (বেদায়ান)

الانضمام إلى المحادثة